শীতের তীব্র ঠান্ডা থেকে রক্ষা পেতে শরীয়ত মোজার ওপর মাসেহ করার বিশেষ বিধান দিয়েছে। এটি বিশেষ করে শীতকালে অজু করার সময় পা ধোয়ার ঝামেলা কমাতে অনেক সহজ একটি পদ্ধতি। তবে এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম ও শর্ত মেনে চলতে হবে।
মোজার ওপর মাসেহ করার নিয়ম
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী, অজু করে পা ধোয়ার পর চামড়ার মোজা পরলে তাতে মাসেহ করা বৈধ। তবে সাধারণ সুতার তৈরি মোজা বা যেসব মোজা পানির প্রবেশ ঠেকাতে পারে না, সেগুলোর ওপর মাসেহ করা বৈধ নয়।
হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "মুসাফিরদের জন্য তিন দিন তিন রাত এবং মুকিমদের জন্য এক দিন এক রাত মোজার ওপর মাসেহ করার অনুমতি রয়েছে।" (আবু দাউদ)
মাসেহ বৈধ হওয়ার শর্তসমূহ
১. অজু করে পাক-পবিত্র অবস্থায় মোজা পরতে হবে।
২. মোজা এমন হতে হবে, যা দিয়ে টাখনু ঢেকে থাকে।
৩. মোজা ছেঁড়াফাটা হলে পায়ের ছোট আঙুলের তিন আঙুলের সমান বা তার কম ছেঁড়াফাটা থাকতে হবে।
৪. মোজা পায়ের সঙ্গে এঁটে থাকবে এবং হাঁটার সময় সরবে না।
৫. মোজা এমন পুরু হতে হবে, যাতে পানি ভেদ করে পায়ের চামড়ায় পৌঁছাতে না পারে।
মাসেহ ভেঙে যাওয়ার কারণ
১. যেসব কারণে অজু ভেঙে যায়, সেসব কারণেই মাসেহও ভেঙে যাবে।
২. মোজা খোলা হলে মাসেহ বাতিল হয়ে যাবে।
৩. নির্ধারিত সময় শেষ হলে মাসেহ আর বৈধ থাকবে না।
৪. মোজার ওপর পানি পৌঁছালে মাসেহ ভেঙে যাবে।
চামড়ার মোজার বিকল্প
যদি চামড়ার মোজা না থাকে, তবে এমন মোজা ব্যবহার করতে হবে যা মোটা ও মজবুত। এগুলো পরিধান করে দীর্ঘক্ষণ হাঁটলেও ছিঁড়ে যাবে না বা নষ্ট হবে না। সাধারণ সুতার বা পশমের মোজা এই শর্ত পূরণ করে না।
আরও কিছু প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা
- মুসাফিরদের জন্য তিন দিন তিন রাত এবং মুকিমদের জন্য এক দিন এক রাত মোজার ওপর মাসেহ করার সময়সীমা নির্ধারিত।
- মাসেহের সময় অজু থাকা আবশ্যক।
- প্লাস্টার বা ব্যান্ডেজের ওপর মাসেহ করা জায়েজ। তবে নির্ধারিত সময় শেষে নিয়ম মেনে নতুন করে মাসেহ করতে হবে।
- পাগড়ি, টুপি, বোরকা বা হাতমোজার ওপর মাসেহ জায়েজ নয়।
উপসংহার
শীতের কষ্ট কমাতে এবং অজুকে সহজ করতে মোজার ওপর মাসেহ শরীয়তের অন্যতম সহজ ও কার্যকর বিধান। তবে এটি করতে হলে সঠিক নিয়ম ও শর্ত মেনে চলা জরুরি। শীতকালে এই বিধান মানলে অনেকেই উপকৃত হতে পারেন।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!