গিবত, বা অন্যের দোষ নিয়ে আলোচনা করা, মুসলিমদের জন্য একটি জঘন্য অপরাধ। মহান আল্লাহ আমাদেরকে এ কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি গিবতকে মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়ার সাথে তুলনা করেছেন। (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১২)
গিবত এতটাই জঘন্য যে, পরকালে এই কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, নবী (সাঃ) মিরাজের রাতে এমন এক সম্প্রদায়ের দেখা পান যাদের নখ তামার তৈরি এবং তারা দিয়ে নিজেদের মুখ ও বুকে আঁচড়াচ্ছে। জিজ্ঞাসা করলে হজরত জিবরাঈল (আঃ) বলেন, এরা হলো সেসব লোক যারা মানুষের মাংস খেত (গীবত করত) এবং তাদের সম্মানে আঘাত করত। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৮)
আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) গিবতকে ব্যভিচারের চেয়েও জঘন্য মনে করতেন। তিনি বলেছেন, "গিবত ব্যভিচারের চেয়েও জঘন্যতম গুনাহ।" (শুআবুল ঈমান)
অনেকের ধারণা, কারো মধ্যে যদি সত্যিই দোষ থাকে, তাহলে তা নিয়ে আলোচনা করা গিবত নয়। কিন্তু হাদিসে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, অনুপস্থিতিতে কারো দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করা, যা শুনলে সে অসন্তুষ্ট হয় - এটাই গিবত। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৮৯)
গিবতের পরকালীন পরিণতি ভয়াবহ। আমাদের সকলেরই উচিত এই পাপ থেকে নিজেদের দূরে রাখা এবং পরিবার-পরিজনদেরও সতর্ক করা। মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাওফিক দান করুন।
আল্লাহর ভয়: মনে রাখবেন, আল্লাহ সবকিছু দেখছেন এবং শুনছেন। গিবত করলে আল্লাহর শাস্তি ভোগ করতে হবে।
নবীর (সাঃ) অনুসরণ: নবী (সাঃ) গিবতকে ঘৃণা করতেন। আমাদের উচিত তাঁর অনুসরণ করা।
পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া: অন্যের ভুলত্রুটি দেখে তাকে সমালোचना করার পরিবর্তে তার প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত।
নিজের দোষ-ত্রুটি সম্পর্কে চিন্তা করা: অন্যের দোষ খুঁজে বের করার চেয়ে নিজের দোষ-ত্রুটি সম্পর্কে চিন্তা করা এবং সেগুলো সংশোধন করার চেষ্টা করা উচিত।
ইতিবাচক চিন্তাভাবনা: নেতিবাচক চিন্তাভাবনার পরিবর্তে ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করা উচিত।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!