সিরিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত এক সময় কিছুটা থেমেছিল, তবে বর্তমানে পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। নতুন করে উত্তরের বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণ এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে দেশটিতে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে সিরিয়ার যুদ্ধের কারণে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ নিজেদের বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
২০২০ সালে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির পর চার বছর শান্তি ছিল, কিন্তু বিদ্রোহীদের আকস্মিক আক্রমণ আবার সংঘর্ষে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। ইতিমধ্যে, হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে, বিশেষ করে কুর্দি জনগণ আলেপ্পো ছেড়ে নিরাপত্তার জন্য এসডিএফ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে চলে গেছে।
সিরিয়ার সরকারি বাহিনী উত্তরাঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে, আর পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বাশার আল-আসাদ সরকার ভয়াবহ ধ্বংসাত্মক নীতি গ্রহণ করতে পারে, যা মানুষের জীবন ও সম্পদকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এর ফলে আরও লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুতি হবে এবং শহরগুলো ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য দ্রুত কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। কাতারের দোহার ফোরামের সম্মেলনে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হতে পারে, যেখানে তুরস্ক, ইরান এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে আলোচনা শুরু হতে পারে। এই বৈঠক সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করার একটি সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
কূটনীতির মাধ্যমে মানবিক সংকট সমাধান সম্ভব। সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো এবং মৌলিক সুরক্ষা বিধান নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। তবে এই প্রচেষ্টা তীব্র সংঘাত ও সহিংসতা আরো বাড়ানোর আগেই দ্রুত করা উচিত।
কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি বহুপক্ষীয় সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যার মূল কারণগুলো সমাধান করা দরকার। সিরিয়ার সংকট সমাধানে তুরস্ক, রাশিয়া, ইরান ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক শক্তির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সিরিয়ার জনগণের নিরাপত্তা এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য কূটনৈতিক উদ্যোগগুলো আরো কার্যকরভাবে কাজ করতে হবে।
এখনও সময় আছে, সিরিয়ার মানুষের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিলে তাদের জীবন রক্ষা করা সম্ভব। যদি না নেওয়া হয়, তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!