যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে ১৩২ বছর পর দেখা মিললো চমকপ্রদ এক ঘটনার পুনরাবৃত্তির। ১৮৮৮ সালে চার বছর ক্ষমতায় থাকার পর নির্বাচনে হেরে প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডকে বিদায় নিতে হয়েছিল। তবে, ১৮৯২ সালে আবারও তিনি জয়ী হয়ে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসেন। এবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত ধরে সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হলো।
২০২০ সালে জো বাইডেনের কাছে হেরে ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ছাড়তে বাধ্য হন। চার বছর পর এবার বিপুল ভোটে জয়লাভ করে ওয়াশিংটনে ফিরছেন ট্রাম্প। মঙ্গলবারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। ট্রাম্প এই জয়ের মধ্য দিয়ে আরেকটি মাইলফলক গড়লেন—সবচেয়ে বেশি বয়সে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে।
মঙ্গলবারের নির্বাচনে শুধু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনই হয়নি, ভোট হয়েছে সিনেটের ৩৪টি এবং প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫টি আসনের জন্য। পাশাপাশি কিছু রাজ্যের গভর্নর এবং অঙ্গরাজ্যের আইনসভায়ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে আগাম ভোট পড়েছে প্রায় ৮ কোটি ২০ লাখ।
ভোট গণনা শেষে ফলাফল প্রকাশ হতে শুরু করলে দেখা যায়, অধিকাংশ রাজ্যেই ট্রাম্প এগিয়ে রয়েছেন। তবুও সবার দৃষ্টি ছিল দোদুল্যমান সাত অঙ্গরাজ্যের দিকে। বুধবার সকালে ফলাফল স্পষ্ট হয়ে যায়—যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পই জয়ী হচ্ছেন।
২০২০ সালের নির্বাচনে হেরে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান ও সমর্থকদের উসকানি দিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন ট্রাম্প। এমনকি মামলা ও অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি, যা অনেকের কাছে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। তবে, চমকপ্রদভাবে ট্রাম্প আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ফিরে এলেন ক্ষমতার মসনদে।
প্রয়োজনীয় ২৭০ ইলেকটোরাল ভোট পাওয়ার আগেই নিজের বিজয় নিশ্চিত ধরে নিয়ে গভীর রাতে এক ভাষণে ট্রাম্প জয় ঘোষণা করেন। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস পরে পরাজয় মেনে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানান।
বিজয়ী ভাষণে ট্রাম্প আশ্বাস দেন, তিনি কোনো যুদ্ধ শুরু করবেন না বরং বিদ্যমান যুদ্ধ থামাবেন।
এই নির্বাচনে রিপাবলিকানরা শুধু প্রেসিডেন্ট পদেই জয়ী হয়নি, কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। সিনেটের ১০০ আসনের মধ্যে রিপাবলিকানরা পেয়েছে ৫২টি আসন। অন্যদিকে, প্রতিনিধি পরিষদেও রিপাবলিকানরা ২০১ আসনে জয়ী হয়ে এগিয়ে রয়েছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!