ইসরায়েল সরকার এবং লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এই চুক্তি বাস্তবায়ন হলে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা উত্তেজনা প্রশমিত হতে পারে। এ বিষয়ে শিগগিরই ঘোষণা দিতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ।
লেবাননের চারজন জ্যেষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, চুক্তি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
- ইসরায়েলের প্রস্তুতি
ইসরায়েলের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আজ মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হতে পারে। যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
ইসরায়েলের জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেছেন, সম্ভাব্য চুক্তির অধীনে দক্ষিণ লেবাননে হামলা চালানোর সক্ষমতা ইসরায়েল ধরে রাখবে। তবে লেবানন আগে এই ধরনের শর্তে আপত্তি জানিয়েছিল।
- যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের ভূমিকা
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কারবি বলেছেন, "আমরা খুব কাছাকাছি চলে এসেছি, তবে সবকিছু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা ঠিক হবে না।" ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের দপ্তরও জানিয়েছে, ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার জানিয়েছেন, দুই পক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য অনেকটাই কমে এসেছে, তবে চুক্তিতে পৌঁছাতে আরও কিছু পদক্ষেপ প্রয়োজন।
- দীর্ঘ সংঘাতের ইতিহাস
ইসরায়েলের গাজায় আগ্রাসন শুরু হয় গত বছরের ৭ অক্টোবর। হামাসের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের সমর্থনে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায়। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে সংঘাত তীব্র রূপ নেয়। ইসরায়েল লেবাননে স্থল অভিযান চালিয়ে হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নেতা হাসান নাসরুল্লাহ।
- সম্ভাব্য সমঝোতা চুক্তি
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রস্তাবিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে হিজবুল্লাহ ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। এটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি করেছে। লেবাননের পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার ইলিয়াস বওউ সাব জানিয়েছেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ইতিবাচক মনোভাব ছাড়া চুক্তি বাস্তবায়নে আর কোনো বড় বাধা নেই।
ইসরায়েল-হিজবুল্লাহর যুদ্ধবিরতি চুক্তি সফল হলে এটি মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!